জীবন যাদের অপরের সহযোগিতার ওপর নির্ভরশীল, তাদের আনন্দের উপলক্ষ্য খুব একটা আসে না। ঈদের দিনও অনেকের জোটে না ভালো খাবার কিংবা নতুন পোশাক। সুখের আক্ষেপ না হয় উহ্য থাকুক, সামান্য একটু স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য তাদের ভাগ্যবিধাতার অপেক্ষায় থাকতে হয়। সকাল হলেই হাত পেতে দাঁড়াতে হয় অন্যের দুয়ারে। সমাজ তাদের নাম দিয়েছে ভিক্ষুক।
এই ভিক্ষুকজীবনে স্বপ্ন দেখাটাই যেখানে বিলাসিতা, সেখানে সেই স্বপ্নকেই বাস্তবে রূপ দিয়েছে শেরপুরের কয়েকজন তরুণ। তারা গড়ে তুলেছে ‘আমরা কজন’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। গত ২২ মার্চ শেরপুর জেলার স্থানীয় গোল্ডেন ভ্যালী পার্কে এই সংগঠনের উদ্যোগে হয়ে গেল ভিক্ষুকদের নিয়ে বনভোজন। তারা এই আয়োজনের নাম দিয়েছিল ‘ভিক্ষাবিলাস’।
বনভোজনে অর্ধশতাধিক ভিক্ষুকদের নিয়ে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে আনন্দযজ্ঞ। আয়োজন করা হয় খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। মহিলা ভিক্ষুকদের জন্য বালিশ খেলা দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হলেও হাড়ি ভাঙা ও নিজস্ব প্রতিভা প্রকাশ ইত্যাদি প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে শেষে হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিজয়ীদের দেওয়া হয় পুরস্কার। অনুষ্ঠানে ছিল বাহারী খাবারের আয়োজন।
আয়োজকরা জানান, করোনা থেকে সুরক্ষার জন্য ভিক্ষুকদের হাতে তুলে দেওয়া হয় মাস্ক। এমনকি যারা এই আয়োজনে অংশ নিয়েছিল সবাইকে যাতায়াত বাবদ প্রদান করা হয় নগদ অর্থ।
বনভোজনে অংশ নেওয়া আব্দুর রহিম বলেন, আমাগো খুব ভালা লাগতেছে। আমাগো লইয়া এডা পিকনিক অইলো, খাইলাম, আমুদ করলাম। খোদা তাগো রহম করুক।
আমরা কজন সংগঠনের উদ্যোক্তা রিজভী আহমেদ বলেন, আমরা সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের জন্য কিছু করতে চাইছিলাম। তারা যেন একদিনের জন্য হলেও আনন্দ পায় সেজন্য পিকনিক করার কথা ভাবি। এমন আয়োজন করতে পেরে আমাদেরও ভালো লেগেছে।
এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন স্থানীয়রা। বিত্তবানরা এগিয়ে এলে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মুখে এভাবেই হাসি ফুটবে বলে মনে করেন তারা।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।